শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১১

যকৃতের পরীক্ষা ও হেপাটাইটিস-সি

যকৃৎ দেহের দ্বিতীয় বৃহত্তম অঙ্গ। শরীরের তাবৎ বিপাক কাজের কেন্দ্রস্থলই হচ্ছে যকৃৎ। যকৃৎ অসুস্থ হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রদাহে আক্রান্ত হয়।
আছে রক্তের কিছু পরীক্ষা, যা দিয়ে জানা যায় যকৃৎ সুস্থ না অসুস্থ।
ষ যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়ে যাচাই করা যায় যকৃতের কাজকর্ম_ এসব রাসায়নিক যকৃৎ তৈরি করে অসুস্থ হলে রক্তে এর প্রতিফলন পড়ে। ষ বিলিরুবিন ষ এলবুমিন ষ প্রোথ্রমবিন টাইম, রক্তজমাট বাঁধার ক্ষমতা এ দিয়ে মাপা যায়।
সঙ্গে আইএনআর ষ যকৃতের প্রদাহ আছে কি-না তাও যাচাই করা যায়_ (যকৃতের এনজাইম পরীক্ষা) যদি বাড়ে তাহলে বিপত্তি। ষ এলানিন এমাইনো ট্রান্সফারেট ষ এসপারটেট এমাইনো ট্রান্সফারেট। আবার এলকাসাইন ফসপাটেট বাড়লে বোঝা যায় পিত্তপ্রবাহী বোন নালিতে ঘটেছে অবরোধ।
যেজন্য করা হয় এসব টেস্ট
ষ চিকিৎসার ইতিহাস, দেহের পরীক্ষা এসব করে যদি বোঝা যায় যকৃৎ অসুস্থ হতে পারে, তাহলে যাচাই বা প্রমাণ করার জন্য করতে হয় এসব টেস্ট।
ষ আবার পরীক্ষা করে নির্ণয় করা যেতে পারে যকৃতের দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ। যকৃতের এনজাইম যদি ৬ মাসের ওপর উঁচুমানে অটল থাকে তাহলে হেপাটাইটিস-সি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা।
ষ যদি ভাইরাস রোধী ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয় তাহলে চিকিৎসা ঠিকমতো কাজ করছে কি-না তা জানার জন্য মাঝে মধ্যে করে দেখতে হয় এসব টেস্ট।
ফলাফল নানা রকমের হতে পারে। যেমন_
ষ স্বাভাবিক অর্থাৎ সব মান স্বাভাবিক। ষ অস্বাভাবিক।
একটি বা একাধিক টেস্টের মান স্বাভাবিক না থাকতে পারে। যকৃৎ কার্যকলাপ পরীক্ষায় স্বাভাবিক ফল পাওয়া না গেলে বোঝা যায় যে, যকৃতে হয়তো প্রদাহ হয়েছে বা যকৃৎ ঠিকমতো কাজ করছে না কোনো কারণে। হতে পারে ভাইরাস সংক্রমণ।
যা ভাবব
যকৃতের এনজাইমগুলো রক্তে বেড়ে যেতে পারে নানা কারণে। কেবল হেপাটাইটিস-সি সংক্রমণ নয়। হতে পারে স্থূলতা, হেপাটাইটিস-বি সংক্রমণ, অটোইমুন হেপাটাইটিস, ওষুধের বিষক্রিয়া, দীর্ঘদিন মদ্যপান_ এসব কারণেও। তখন অন্যান্য টেস্ট প্রয়োজন হতে পারে যেমন হেপাটাইটিস-সি অ্যান্টিবডি রক্ত পরীক্ষা। এমনকি যকৃতের বায়োপসি। হেপাটাইটিস-সি নির্ণয়ের জন্য। যাদের ক্রনিক হেপাটাইটিস-সি সংক্রমণে রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে যকৃতের এনজাইমগুলো উঁচু মানে থাকেই। তবে রোগের গতিপথে এসব এনজাইমের ওঠানামা চলতে থাকে। যকৃতের এসব টেস্ট করে ডাক্তাররা সহজের রোগীর জন্য একটি চিকিৎসা পরিকল্পনা করতে পারেন। যেসব ক্ষেত্রে চিকিৎসা চাই-ই চাই_ ষ লিভার বা যকৃতের এনজাইমগুলো যদি ৬ মাসের বেশি উঁচু মানে অটল থাকে। ক্রনিক সংক্রমণ প্রতিপন্ন হয় এতে।
ষ রক্তে যদি হেপাটাইটিস-সি ভাইরাসের শনাক্তযোগ্য মান থাকে_ (পজিটিভ হেপাটাইটিস সিআরএনএ টেস্ট) এটি সক্রিয় সংক্রমণ নির্দেশক। ষ যকৃতের গুরুতর ক্ষতির প্রমাণ, লিভার বায়োপসিতে প্রাপ্ত।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন