সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

আর্থ্রাইটিস চিকিৎসায় রোগীদের বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন নেই

ভারতের আর্থ্রাইটিস বিশেষজ্ঞ ডা. ভারত মোদি বলেছেন, আর্থ্রাইটিস চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশী রোগীদের বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। আর্থ্রাইটিস মোকাবেলায় বাংলাদেশের চিকিৎসা সুবিধা ও চিকিৎসকদের দক্ষতা আমাকে মুগ্ধ করেছে।
গতকাল রাজধানীতে বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির সম্মেলনে আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসা সুবিধার ওপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন নিটোরের (পঙ্গু হাসপাতাল) পরিচালক প্রফেসর ডা. আবদুল আউয়াল রিজভী, বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির সভাপতি ডা. রাম ডিউ রাম কৈরি ও নিটোরের সহকারী অধ্যাপক ডা. আবদুল গনি মোল্লা।
ডাক্তার আবদুুল আউয়াল রিজভী বলেন, ‘এটা অত্যন্ত ভুল ধারণা যে, আর্থ্রাইটিসের কোনো চিকিৎসা নেই এবং সারা জীবন এর দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিজ্ঞান ও চিকিৎসা শাস্ত্র এখন এতটাই উন্নতি করেছে যে, টিকেএ (টোটাল নি আর্থোপ্লাস্টি) এবং টিএইচএ’র (টোটাল হিপ আর্থোপ্লাস্টি) মতো চিকিৎসা ব্যবস্খার সাহায্যে এখন কঠিনতম আর্থ্রাইটিস সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। তারপর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই রোগীরা স্বাভাবিক জীবন যাপন অব্যাহত রাখতে পারবেন।’
ডা. রাম ডিউ রাম কৈরি বলেন, ‘চিকিৎসা শাস্ত্রে বাংলাদেশ দ্রুত উন্নতি করছে এবং সমাজের সব স্তরের রোগীদের জন্য এখন সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব।’
সম্মেলনে জানানো হয়, আর্থ্রাইটিস এক বা একাধিক হাড়ের মধ্যে সৃষ্ট রোগ, যার ফলে হাড়ে ব্যথা হওয়া, ফুলে যাওয়া, শক্ত হয়ে যাওয়া এবং নড়াচড়া করার ক্ষমতা হন্সাসের মতো অসুবিধা সৃষ্টি হয়। স্বাভাবিক নড়াচড়া করার জন্য যে হাড়ের প্রয়োজন হয়, সেগুলো রক্ষাকারী কার্টিলেজ ভেঙে যাওয়ার ফলে আর্থ্রাইটিস দেখা দেয়। এই কার্টিলেজ সাধারণত হাড়ের ওপর সৃষ্ট চাপ কমিয়ে আনে। আর্থ্রাইটিসের ফলে হাড়ের কার্টিলেজের পরিমাণ হন্সাস পায় ও হাড়গুলো একে অন্যের সাথে ঘষা খায়, যার ফলে হাড়ে ব্যথা হয়, ফুলে যায় এবং শক্ত হয়ে যায়।
টিকেএ এবং টিএইচএ আর্থ্রাইটিসের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় ও কার্যকর চিকিৎসা, যার ফলে বিশ্বজুড়ে অনেক রোগী ব্যথা থেকে মুক্তি পেয়ে সাধারণ জীবন যাপন করছেন। টিকেএ এবং টিএইচএ’র চিকিৎসায় যেসব হাড় একে অন্যের সাথে ঘষা খেয়ে ব্যথা সৃষ্টি করে, সেগুলোর ওপর রক্ষাকারী ক্যাপ বসিয়ে আলাদা করা হয়।
এতে আরো বলা হয়, বর্তমানে মানুষের একটি বড় ভুল ধারণা হচ্ছে যে, এই চিকিৎসাগুলো বিদেশ যাওয়া ছাড়া সম্ভব নয় এবং কেবল অত্যন্ত ধনীরাই এই চিকিৎসা সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। সাম্প্রতিককালে ঢাকার বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসাকেন্দ্র এসব চিকিৎসার ব্যবস্খা করেছেন এবং দক্ষতার সাথে চিকিৎসা করে যাচ্ছেন, যা আশপাশের অন্যান্য উন্নত দেশের চিকিৎসা ব্যবস্খার সমকক্ষ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন