বুকে ব্যথা এক ধরনের জটিল সমস্যা। এ সমস্যায় যে কোন ব্যক্তিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যেতে হয়। বিভিন্ন কারণে বুকে ব্যথা হয়ে থাকে। প্রথমে দেখতে হবে বুকে ব্যথা আঘাতজনিত কারণে না আঘাতবিহীন কারণে। যদি আঘাতবিহীন কারণে বুকে ব্যথা হয় তাহলে প্রথমে নিশ্চিত হতে হবে এটি হƒদরোগজনিত কারণে না অন্য কোন কারণে হয়েছে। এ কারণ নির্ধারণের জন্য রোগীর কাছ থেকে রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত ইতিহাস জানতে হবে। এর পর শারীরিক ও ল্যাব পরীক্ষা করে সঠিক রোগ নির্ণয় করলে বেশিরভাগ বুকের ব্যথা ভালো করা সম্ভব।
যে কারণে বুকে ব্যথা হয়
১. হƒদরোগজনিত কারণ
২. ফুসফুসজনিত কারণ
৩. মাংসপেশিজনিত কারণ
৪. খাদ্যনালীজনিত কারণ
৫. মানসিক কারণ
৬. আরও অন্যান্য কারণ
প্রথমে বুকের ব্যথা কোন স্থানে বুকের মাঝখানে, না বাম বা ডান পাশে।
বুকে ব্যথার প্রকৃতি : চাপ চাপ ব্যথা, মনে হয় বুকের মাঝখানে পাথর বসিয়ে রেখেছে এমন, দম বন্ধ হয়ে আসে এমন বা অনুভূতিহীন ব্যথা হƒদরোগজনিত কারণ।
তীব্র ব্যথা, ছুরি দিয়ে আঘাত করলে যেমন মনে হয়, পোড়ানো ব্যথা, শ্বাস নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র ব্যথা, ফুসফুসজনিত কারণ যেমন নিউমোনিয়া, পালমোনারি অ্যামবলিজম, হƒদযন্ত্রের প্রদাহ।
হঠাৎ তীব্র পীড়াদায়ক ব্যথা বুকের সামনে থেকে পেছনে চলে যায় অড়ৎঃরপ উবংবপঃরড়হ (ধমনী ছেঁড়াজনিত কারণ)
যদি বুকে ব্যথা পরিশ্রম করলে, দুশ্চিন্তা করলে, ঠাণ্ডা আবহাওয়ার সংস্পর্শে এলে, দুঃস্বপ্ন দেখলে বাড়ে কিন্তু বিশ্রাম নিলে, জিহ্বার নিচে নাইট্রেট জাতীয় ওষুধ দিলে কমে তাহলে হƒদরোগ হয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়। খাবার পর, শোবার সময়, গরম খাবার, মদ পান করলে এবং খালি পেটে যদি ব্যথা বাড়ে, অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ খেলে কমে যায়, তাহলে খাদ্যনালীজনিত কারণ।
বুকের ব্যথার সঙ্গে শ্বাসকষ্ট হলে হƒদরোগ, পালমোনারি অ্যামবলিজম, নিউমোনিয়া, নিউমোথোরাক্স হয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়।
পরিশ্রম শুরু করার কিছুক্ষণ পর থেকে ব্যথা শুরু হয়, বিশ্রাম নিলেও ব্যথা থাকে, ব্যথা নিরাময় জাতীয় ওষুধ (যেমন উরপষড়ভবহ) জাতীয় ওষুধ খাওয়ার পর ব্যথা কমে তাহলে মাংসপেশিজনিত কারণে হয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়।
বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা, হঠাৎ কোন শব্দ হলে বুকের ব্যথা বেড়ে যায় ও বুক ধড়ফড় করে, কোন মৃত্যুর সংবাদ শুনলে বুকে ব্যথা শুরু হয়, বিভিন্ন ধরনের দুশ্চিন্তা করলে বুকে ব্যথা বেড়ে যায় তাহলে মানসিক কারণে হয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়। জরুরি বিভাগে বুকের ব্যথাজনিত কারণে যেসব রোগী আসে তার শতকরা ১০ ভাগের বেশি আসে মানসিক বা দুশ্চিন্তাজনিত কারণে। অনেক সময় পেটে ব্যথার সঙ্গে সঙ্গে বুকে ব্যথা থাকতে পারে যেমন পিত্তথলিতে পাথর । যে কারণেই বুকে ব্যথা হোক না কেন রোগীকে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা যেমন বুকের ইসিজি জাতীয় পরীক্ষা করে দ্রুত রোগ নির্ণয় করতে হবে এবং সঠিক চিকিৎসা করালে বেশিরভাগ রোগী ভালো হয়ে যায় এবং অনেক সময় দ্রুত হƒদরোগ নির্ণয় করা যায় এবং সঠিক চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেও যদি কোন রোগের কারণ না পাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে রোগীকে সঠিক উপদেশ দিয়েও বুকের ব্যথা ভালো করা সম্ভব।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন