শনিবার, ১১ জুন, ২০১১

ঘামের দুর্গন্ধ



গরমে ঘাম তো হবেই। ঘামের দুর্গন্ধে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় অনেকেরই। এটি আমাদের শরীরের জন্য খুবই দরকারী। কারণ আমরা না ঘামলে আমাদের দেহে প্রতিদিন যে পরিমাণ তাপ তৈরি হতো তা আমরা কিছুতেই সহ্য করতে পারতাম না। আসলে এ তাপ ঘামের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আমাদের দেহ থেকে বেরিয়ে যায় এবং দেহকে ঠাণ্ডা রাখে। দেহে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি ঘর্মগ্রন্থি আছে। তবে দুর্গন্ধের জন্য ঘাম দায়ী নয়। দেহে যেসব ব্যাকটেরিয়া রয়েছে তা ঘামের সংস্পর্শে এলে এমন দুর্গন্ধ হয়। ঘামের চরিত্র ভিন্ন হতে পারে। ব্যায়াম করলে শরীরে যে ঘাম হয় আর নার্ভাস বা ভয় পেলে যে ঘাম হয়_ এ দুটি একই রকম নয়। বগলের ঘামে এমন কিছু আছে যাতে ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে জোরে প্রতিক্রিয়া করে। তাই ঘামে বেশি গন্ধ।
ঘামের দুর্গন্ধ দূর করা
আপনার মুখ যদি খুবই ঘামে তাহলে ঠাণ্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিন। এরপর ভিজে ত্বকে হারবাল অন্টিজেন্ট লোশন ব্যবহার করুন। এভাবে দু'চার দিন করলেই অতিরিক্ত ঘাম হবে না। মেকআপ করার আগেও এ পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
ঘাম প্রতিরোধে ডিওডোরেন্ট অথবা অ্যান্টিপারস্পিরেন্ট বা ঘাম প্রতিরোধকারী উপাদান ব্যবহার করা যেতে পারে। ডিওডোরেন্ট রোলস, বার, পাউডার, ক্রিম ও অ্যারোসল হিসেবে পাওয়া যায়। ডিওডোরেন্ট হতে পারে সুগন্ধিযুক্ত কিংবা সুগন্ধিহীন। তবে সুগন্ধিহীন ডিওডোরেন্টই ভালো। ডিওডোরেন্ট গোসলের পরপরই ব্যবহার না করে গোসলের কিছু সময় পর শরীর শুকনো ও ঠাণ্ডা করে তারপর ব্যবহার করুন। এতে ডিওডোরেন্ট দীর্ঘ সময় কার্যকারিতা পাবে। খনিজ পদার্থ জিংক ও ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে এমন খাবারই ঘাম প্রতিরোধে সহায়তা করে। খাবারে জিংকের উৎস_ মাংস, ডিম, ডিমের কুসুম, দুধ, নারিকেল, শস্যদানা, পেঁয়াজ, বরবটি ও শিমের বিচি ইত্যাদি। ম্যাগনেসিয়ামের উৎস_ চাল, চীনাবাদাম, শস্যদানা, আখরোট, তিল, বাঁধাকপি ইত্যাদি।
গোসলের পানিতে কয়েক ফোঁটা গোলাপজল বা কোলন মিশিয়ে নিয়মিত গোসল করুন। ঘামে দুর্গন্ধ হবে না। নিয়মিত ব্যায়াম, ঠাণ্ডা খাবার, সালাদ, তাজা ফলের রস, বেলের শরবত খান প্রতিদিন কাজে বের হওয়ার আগে। সকালে ভালোভাবে গোসল করুন। সপ্তাহে একদিন হালকা গরম পানিতে গোসল করতে পারেন। যথাসম্ভব পরিষ্কার কাপড় পরবেন। প্রতিদিন ব্যবহার করা পোশাকগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন। এ সময়ে সিনথেটিক কাপড় ব্যবহার না করে সুতির পোশাক পরা আরামদায়ক। বাসায় ফিরেই পরনের পোশাক রোদে বা ফ্যানের নিচে মেলে দিতে হবে যাতে বাতাসে ঘাম শুকিয়ে যায়। কাপড় রাখার স্থানে অবশ্যই ন্যাপথলিন দিয়ে রাখতে হবে। মাড় দেওয়া ইস্ত্রি করা কাপড় বেশিদিন নির্দিষ্ট স্থানে তুলে রাখা যাবে না, ব্যবহার করতে হবে।
ঘামের পরিমাণ বেশি হলে বাইরে বের হওয়ার আগে হালকা পারফিউম ব্যবহার করতে পারেন অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে। বগল কিংবা শরীরের অন্যান্য অঙ্গ_ যেসব অংশ বেশি ঘামে তা নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন। আসলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাই মূল কথা। ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা মেনে চললে ঘামের দুর্গন্ধের বিরক্তিকর ও অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হবে 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন