শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১১

শীতে ঠোঁটের যত্ন

শীতের এই শুষ্ক হাওয়ায় শরীরের নানা অঙ্গের মতো ঠোঁটেরও যত্ন নেওয়া চাই। ঠোঁটের ত্বক খুবই নরম ও নাজুক, ঠোঁটে কোনো তেলগ্রন্থিও থাকে না, তাই বাইরের আবহাওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করা ঠোঁটের জন্য বেশ কঠিন। ঠোঁট শুষ্ক হওয়ার আগেই তা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। ইমোলিয়েন্ট, পেট্রোলিয়াম জেলি, ভ্যাসলিন, কোল্ডক্রিম ইত্যাদি ঠোঁটে ব্যবহার করা প্রয়োজন। যতক্ষণ বাড়িতে থাকবেন ঠোঁটে ভ্যাসলিন লাগাবেন। এতে ঠোঁটের শুষ্কতা দূর হয়ে ঠোঁট সরস ও মসৃণ হয়ে উঠবে। এক চামচ দুধে ৫ ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে একদিন পরপর ঠোঁটে লাগালে ঠোঁট নরম থাকে। ঠোঁট ফেটে মরা চামড়া উঠলে সেটা হাত দিয়ে টেনে তুলবেন না। ঠোঁট শুকিয়ে গেলে বারবার জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজাবেন না বরং ঠোঁটে একটু বেশি করে ভ্যাসলিন লাগিয়ে রাখুন। নরম হলে টিস্যু দিয়ে হালকাভাবে ঘষে চামড়া তুলে ফেলুন। এরপর অল্প ভ্যাসলিন লাগিয়ে রাখুন। কখনও কখনও ঠোঁট ফেটে রক্তও বের হতে পারে। এতে ঠোঁটে ব্যথাও হয়। এ সময় ঠোঁটে লিপস্টিক না লাগিয়ে বরং গোলাপজলে গ্গি্নসারিন মিশিয়ে বারবার ঠোঁটে লাগান। এতেও না সারলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। শীতের সময় শুধু যে ঠোঁট ফাটে তা নয়। ঠোঁটে আরও কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন এ সময় কারও কারও ঠোঁটে কালচে ছাপ পড়তে দেখা যায়। এতে খুব বেশি ভয় না পেয়ে নিয়মিত পরিচর্যা করলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। প্রতিদিন বাইরে থেকে ফিরে ঠোঁটটাকে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। কারণ ঠোঁটে দীর্ঘ সময় লিপস্টিক লেগে থাকলে কালচে ছাপ পড়তে পারে। গিল্গসারিন ও গোলাপজল মিশিয়ে তুলার সাহায্যে ঠোঁটে লাগাতে হবে। ৫ মিনিট ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলতে হবে। শসার রস সঙ্গে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে লাগালেও খুব তাড়াতাড়ি কালচে ছাপ চলে যায়। ঠোঁটে রোজ দুধের সঙ্গে গোলাপের পাপড়ি বেটে দিলেও ঠোঁটের মসৃণতা বেড়ে যায়। ঠোঁট পরিষ্কার করতে হয় আলতোভাবে। খুব জোরে ঘষলে ঠোঁটের চামড়ার ক্ষতি হয়। এতেও ঠোঁটে কালো দাগ পড়তে পারে। যথাযথ লিপস্টিকও কিন্তু ঠোঁটের শুষ্কতা প্রতিরোধ করে। ভিটামিনসমৃদ্ধ ও অয়েলবেসড লিপস্টিক ঠোঁটের জন্য ভালো। লিপস্টিকের কারণে ঠোঁটে অ্যালার্জি ও ঠোঁটের ক্ষতি হতে পারে। তাই আপনার ঠোঁটে যে কোম্পানির লিপস্টিক কোনো প্রতিক্রিয়া করবে না, সেটাই ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে ব্র্যান্ডের লিপস্টিক ব্যবহার করা ভালো। ফাটা ঠোঁটের জন্য লিপ বাম ও চ্যাপস্টিক প্রয়োজন। তবে অতি সুগন্ধিযুক্ত ও রসযুক্ত চ্যাপস্টিক ব্যবহার না করাই ভালো। লিপস্টিক হিসেবে গল্গসি লিপস্টিক ব্যবহার করা উচিত। ঠোঁট ফেটে গেলে আউটলাইন করে ভেতরে গল্গসি লিপস্টিক দিতে হবে। লাইনার দিলে ঠোঁটের ফাটা অংশ ঠোঁটের বাইরের অংশে সংক্রমিত হবে না। ত্বকের অসুখ যেমন অ্যাকজিমা, অ্যালার্জি ইত্যাদির কারণেও ঠোঁটের ক্ষতি হতে পারে। এতে চিকিৎসার প্রয়োজন। সাময়িক সৌন্দর্যের জন্য অপ্রয়োজনীয় প্রসাধন ব্যবহার করবেন না। ঠোঁটের ত্বক সংবেদনশীল বলেই ঠোঁটে সাবান দেবেন না। চোখের চারপাশ এবং ঠোঁটে সাবান ব্যবহার করলে ক্ষতি হয়। ঠোঁট সবসময় দাঁতের সঙ্গে লেগে থাকে, তাই ঠোঁটের যত্নে ভালো মানের টুথপেস্ট ব্যবহার করা উচিত। লক্ষ্য রাখবেন, সাদা রঙের টুথপেস্ট সাধারণত ভালো হয় ঠোঁটের জন্য, প্রয়োজনে যে টুথপেস্ট ব্যবহার করছেন তা বদলে ফেলুন। সুন্দর ঠোঁটের জন্য ধূমপান পরিহার করা উচিত। ভিটামিন-এর অভাবে ঠোঁট ফেটে যেতে পারে ও ঠোঁটের কোণে ঘা হতে পারে। তাই প্রচুর সবুজ শাক-সবজি ও ফল খাবেন। এছাড়া সূর্যমুখী তেল ঠোঁটের জন্য খুব ভালো। এটা দিনে কয়েকবার ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া এই শীতে ঠোঁটে বেশি সমস্যা হলে বা অন্য কোনো রোগের জন্য অবশ্যই ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন।
যতক্ষণ বাড়িতে থাকবেন ঠোঁটে ভ্যাসলিন লাগাবেন। এতে ঠোঁটের শুষ্কতা দূর হয়ে ঠোঁট সরস ও মসৃণ হয়ে উঠবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন