
তীক্ষষ্ট এবং ছোট আকারের যে কোনো বস্তু শিশুর নাগালের বাইরে রাখুন
নাকের মধ্যে যে ধরনের সমস্যা দেখা যায়
নাকের মধ্যে কোনো কিছু ঢোকানোর ঘটনা সাধারণত শিশুদের মধ্যেই দেখা যায়। এ কারণে কোনো শিশুর নাক দিয়ে দুর্গন্ধযুক্ত শ্লেষ্মা ঝরলে প্রথমেই তার কারণ হিসেবে নাকের মধ্যে বাইরের কোনো বস্তু দায়ী কি-না সেটা দেখা উচিত। শিশুরা খেলাচ্ছলে কিংবা অবসরে হাতের কাছে এ ধরনের বস্তু পেলেই নাসারন্ধ্র দিয়ে ঢুকিয়ে দেয়। নাকের মধ্যে শরীরের অংশ নয় এমন কিছু ঢুকলে তার বাইরে শ্লেষ্মা জড়িয়ে নাকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সেখানে জীবাণু বাসা বাঁধার কারণে ইনফেকশন হয়। তখন নাক থেকে একই সঙ্গে দুর্গন্ধযুক্ত পুঁজ বেরিয়ে আসে। অনেক সময় এসব বস্তু নাকের ভেতরের নিঃসরণের সঙ্গে বিক্রিয়া করে পাথরের সৃষ্টি করে। যাকে বলা হয় রাইনালিথ বা নাকের পাথর। তবে এর বাইরে নাকে আঘাত কিংবা দুর্ঘটনাজনিত কারণে নাকের মধ্যে বাইরের বস্তু নাক ফুটো করে ভেতরে ঢুকে থাকতে পারে।
নাকে কোনো কিছু ঢুকলে যেভাবে বুঝবেন
সাধারণত অভিভাবকরাই প্রথমে বিষয়টি আঁচ করতে পেরে চিকিৎসকের কাছে আসেন। অনেক সময় শিশু নিজেই বিষয়টি বাবা-মাকে বলে থাকে।
উপসর্গ
সাম্প্রতিককালে নাকের একদিকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে থাকলে। বন্ধ নাক দিয়ে দুর্গন্ধযুক্ত শেল্গষ্মা বেরিয়ে এলে। নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হলে। নাকের মধ্যে বাইরের কোনো বস্তু ঢুকলেই নাকে ব্যথা হতে পারে। নাকের মধ্যে বাইরের বস্তু ঢোকার জন্য নাকে হাঁচি হতে পারে।
শিশুর আশপাশে মেঝেতে নাকের ভেতর ঢোকাতে পারে সে রকম আরও কিছু বস্তুর উপস্থিতি মিলবে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা :অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নাক কান গলা রোগ বিশেষজ্ঞ নাক পর্যবেক্ষণ করে নাকে বাইরের বস্তুর উপস্থিতি সম্পর্কে ধারণা নিয়ে থাকেন। তবে ধাতব এবং রঞ্জনরশ্মি অভেদ্য জিনিসের ক্ষেত্রে এক্স-রে করে নাকের মধ্যে বাইরের কোনো বস্তু আছে কি-না তা দেখা যায়।
চিকিৎসা
নাকে কোনো কিছু ঢুকলে প্রথম কাজ হবে সেটিকে নাক থেকে বের করে আনা। নাক থেকে বাইরের বস্তুটিকে বের করার জন্য অনেক সময় শিশুটিকে অজ্ঞান করার দরকার পড়ে। কখনও কখনও অচেতন না করেই বের করা যায়। তবে এটি বের করার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিসহ দক্ষ সার্জনের দরকার পড়বে। নাকের এসব বস্তু বের করার জন্য দেরি করা উচিত নয়। দেরি করলে ঘুমের মধ্যে কিংবা অন্য সময়ে নাক থেকে বস্তুটি ফসকে গিয়ে বাইরের বস্তুটি শ্বাসনালিতে গিয়ে অবস্থাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
নাকের মতো কানের মধ্যে বাইরের বস্তু ঢুকতে পারে। কানের মধ্যে বলতে সাধারণত বহিঃকর্ণকেই বোঝানো হয়ে থাকে। এগুলোর কোনো কোনোটি শিশুরা নিজেরাই বহিঃকর্ণে ঢোকায়। যে কোনো ধরনের শস্যদানা ও বনজ : ছোলা, মটর, পাতার অংশ, ধান। অন্যান্য জিনিসের মধ্যে আছে : পুঁতি বা ছোট বল, ছোট পাথরের টুকরা, শার্টের বোতাম, কাগজ, মুড়ি ইতা্যদি। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে জীবিত কীটপতঙ্গ যেমন_ পিঁপড়া, তেলাপোকা, মশা ইত্যাদি কানের মধ্যে ঢুকে পড়ে। আর কিছু ক্ষেত্রে অসাবধানতাবশত কানে ঢুকে যায়। কানের মধ্যে অনিচ্ছাকৃতভাবে অনেক সময় ধান কানে ঢুকতে দেখা যায়।
কানের মধ্যে কোনো কিছু ঢুকলে কী হয়?
রোগী নিজেই প্রথমে বিষয়টি বুঝতে পারেন। কানের মধ্যে বাইরের কোনো কিছু ঢুকলে বস্তুর ধরন অনুযায়ী উপসর্গ দেখা দেয়। কীটপতঙ্গ ঢুকলে খুব ব্যথা হয়। অন্যান্য ক্ষেত্রে কান বন্ধ হয়ে যায়, কান দিয়ে পুঁজ পড়ে, দুর্গন্ধ হয়। কানের মধ্যে অস্বস্তি তো আছেই।
যেভাবে বুঝবেন
কানের মধ্যে কোনো কিছু ঢুকলে কান পর্যবেক্ষণ করেই বুঝতে পারেন নাক কান গলা রোগ বিশেষজ্ঞ। অনেক সময় অটোস্কোপির মাধ্যমে কান পর্যবেক্ষণ করলে আরও ভালোভাবে বহিঃকর্ণের ভেতরটা দেখা যায়।
কানে কিছু ঢুকলে করণীয়
কী করতে হবে সেটি নির্ভর করে কানে কী ঢুকেছে তার ওপর। কানের মধ্য থেকে কোনো কিছু বের করার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগীকে অচেতন করে নিতে হয়। বিশেষ করে শিশুদের অচেতন করে নেওয়াই ভালো কারণ অচেতন না করে কানের মধ্যে কাজ করতে গেলে কান আঘাতপাপ্ত হতে পারে। কানের মধ্য থেকে কোনো কিছু বের করতে কখনোই কোনো হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত নয়। একইভাবে নিজেরাও বের করা চেষ্টা করা উচিত নয়। অদক্ষ হাতে, দরকারি যন্ত্রপাতি ছাড়া এ ধরনের কাজ করতে গেলে বহিঃকর্ণ এবং কানের পর্দা আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে। অযাচিত অজ্ঞতাবশত খোঁচাখুঁচির জন্য বাইরের বস্তুটি কানের পর্দা ফুটো হয়ে মধ্যকর্ণে ঢুকে যেতে পারে। তখন এটি বের করে আনা আরও জটিল হয়ে যায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন