
২০ বছর আগে স্তন ক্যান্সারের যে পর্যায় ছিল, এখন এর চেয়ে অনেক ভালো। এখন মানুষের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেক বেড়েছে। এ জন্য সাধুবাদ দিতে হয় মানুষের এ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে আগাম চিহ্নিত করার আর চিকিৎসা ক্ষেত্রে অগ্রগতিকে।
লক্ষণ উপসর্গ
এ ক্যান্সারের তেমন লক্ষণ উপসর্গ নাও থাকতে পারে আবার কখনও কখনও মহিলারা খুঁজে পান স্তনে কোনো সমস্যা।
* স্তনে বেদনাহীন কোনো চাকা।
* স্তনের আকার-আয়তনে কোনো পরিবর্তন।
* বগলে কোনো চাকা বা স্ফীতি।
* স্তনবৃন্তে পরিবর্তন বা ক্ষরণ।
* স্তনে ব্যথা-বেদনা।
প্রদাহজনিত স্তন ক্যান্সার :বেশ বিরল যদিও, বাড়ে, দ্রুত চাকা হয় না স্তনে। তবে স্তনের চামড়া পুরু হয়ে যায়, লাল হয়ে যায়, মাঝে ছোট ছোট গর্ত_ কমলার খোসার মতো। হাত দিলে গরম লাগে, মাঝে মাঝে লাল ফুসকুড়ি।
স্তন ক্যান্সার ও ম্যামোগ্রাম : যত আগে এ ক্যান্সার পাওয়া যায় তত সহজ হয় এর চিকিৎসা। স্তনের এক্স-রে ম্যামোগ্রাম টিউমার বড় হওয়ার আগেই একে চিহ্নিত করে ফেলে। যাদের মাঝারি ঝুঁকি রয়েছে আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি তাদের জন্য ৪০ বছর হওয়ার পরপর বছরে একবার ম্যামোগ্রাম করতে বলেন। আমেরিকান প্রিভেনটিভ টাস্কফোর্স পরামর্শ দেয় ৫০ থেকে ৭৪ বছর বয়সকালে দু'বছরে একবার স্ক্রিনিং ম্যামোগ্রাম করার জন্য।
স্তনের আলট্রাসাউন্ড এবং এমআরআই : ডাক্তার বলতে পারেন, বাড়তি আরও ইমেজিং_ স্তনের আলট্রাসাউন্ড। স্তনের সিস্ট যা টিউমার নয়, একে ধরে ফেলে আলট্রাসাউন্ড। যাদের খুব ঝুঁকি তাদের জন্য ফেল হতে পারে এমআরআই।
নিজের স্তন পরীক্ষা নিজেই : স্তন সম্পর্কে জানা, পরিবর্তন কী হতে পারে জেনে তা নজরদারি করা, মাসে একদিন নিজে পরীক্ষা করে দেখা ভালো। ডাক্তারের কাছে জেনে নিতে হবে কী করে পরীক্ষা করতে হয়।
স্তনে যদি চাকা পাওয়া যায় : আতঙ্ক কেন? ৮০ শতাংশ স্তনের চাকা ক্যান্সার হয় না। হয়তো জলস্ফোটক বা সিস্ট। তবে ডাক্তারকে বলতে হবে। আর দুর্ভাগ্যক্রমে টিউমার হলেও যদি আগাম চিকিৎসা হয় তাহলে অনেক সুফল।
স্তন বায়োপসি : প্রয়োজনে টিস্যুর নমুনা নিয়ে ল্যাবে পরীক্ষা। ছোট সুচ দিয়ে নেবেন ডাক্তার এবং পরীক্ষা করবেন।
হরমোন সংবেদনশীল স্তন ক্যান্সার : ডাক্তার তা জেনে নেবেন পরীক্ষা করে, চিকিৎসাও দেবেন।
এইচইআর-২ স্তন ক্যান্সার
এ জন্য আছে বিশেষ চিকিৎসা।
ক্যান্সারের আছে ধাপ :একবার নির্ণয় হলে ডাক্তারকে জানতে হয় কত বড় হয়েছে টিউমার, ছড়িয়েছে কতটুকু, কতদূর। একে বলে স্টেজিং। ০-৪ হলো ধাপ। টিউমার কি স্থানিক? একই স্থানে সীমিত নাকি পাশের লসিকাগ্রন্থিতে প্রবেশ করেছে, নাকি অন্য অঙ্গ যেমন ফুসফুস পর্যন্তও ছড়িয়েছে। ধাপ জেনে, এর ধরন জেনে চিকিৎসা হয় যথাযথ।
বেঁচে থাকার সম্ভাবনা : যত আগে চিহ্নিত হবে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা তত বাড়বে। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির মতে, ধাপ-১ স্তন ক্যান্সার এমন শতভাগ রোগী বেঁচে থাকেন পাঁচ বছর, অনেকে আবার নিরাময়ও হতে পারেন। ধাপ-৪ হলে পাঁচ বছর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা মাত্র ৩০ শতাংশ। তবে কার্যকর চিকিৎসা পেলে সম্ভাবনা আরও বাড়ে।
আছে সার্জারি :স্তনের চাকা অপসারণ, নয়তো স্তন অপসারণ। নির্বাচন করবেন ডাক্তার ক্ষেত্রবিশেষে।
আছে বিকিরণ চিকিৎসা :উচ্চ শক্তির রশ্মি ধ্বংস করে ক্যান্সার কোষ। সার্জারির পর নয়তো কোমার সহসঙ্গী হিসেবে। ষ আছে কেমোথেরাপি। এ ওষুধ ধ্বংস করে ক্যান্সার কোষ। ষ আছে হরমোন থেরাপি। আছে লক্ষ্যভেদী ওষুধ।
ক্যান্সারের পর জীবন : জীবন পরিবর্তনের অভিজ্ঞতা বটে। সে সময় চাই স্বজনের সাহচর্য।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন