শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

পেরোনিজ ডিজিজ কারণ ও চিকিৎসা

অধিকাংশ পুরুষের লিঙ্গ কিছুটা বাঁকা থাকে কিংবা একপাশে হেলে থাকে। প্রতি এক লাখ পুরুষের মধ্যে প্রায় চারশ' জনের লিঙ্গ উত্থিত অবস্থায় খুব বেঁকে যায়। চিকিৎসক সমাজ এ অবস্থাটির নাম দিয়েছেন পেরোনিজ ডিজিজ। কখনও কখনও একে ফাইব্রাস কেভারোসাইটিস বলা হয়। এ পরিস্থিতিতে ইরেকটাইল টিস্যুর (কেভারনোসা) স্তরগুলোতে শক্ত ফাইব্রাস স্কার তৈরি হয়। এ অবস্থা যৌনসঙ্গমকে যন্ত্রণাদায়ক করে তোলে অথবা স্বামী-স্ত্রীর যৌন মিলনকে পুরোপুরি অসম্ভব করে তোলে। কখনও কখনও এ রোগ উত্থিত লিঙ্গকে ্তুঔ্থ কিংবা ্তুট্থ আকারে বাঁকিয়ে তোলে।
যেসব কারণে পেরোনিজ ডিজিজ দেখা দেয়
পেরোনিজ ডিজিজের সঠিক কারণ নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। তবে ধারণা করা হয়, লিঙ্গের কিছু অংশের স্বাভাবিক ইলাস্টিক টিস্যুর জায়গায় স্কার টিস্যু বা শক্ত টিস্যু তৈরি হলে এ অবস্থাটি ঘটে।
স্বাভাবিক পুরুষের ক্ষেত্রে উত্থানের সময় লিঙ্গের ইলাস্টিক টিস্যু বিস্তৃত হয়ে লিঙ্গকে সোজাসুজি উত্থিত করে তোলে। যেহেতু স্কার টিস্যু ইলাস্টিক বা স্থিতিস্থাপক নয় বরং শক্ত, সেহেতু লিঙ্গের অন্যান্য অংশ বড় হওয়ার সময় এটা (স্কার টিস্যু) কঠিন থেকে যায়, ফল হিসেবেও লিঙ্গ বেঁকে যায়। যদি স্কার টিস্যু লিঙ্গের চারপাশে বিস্তৃত হয় তাহলে লিঙ্গটা একটা বোতলের গলার মতো দেখায় অথবা লিঙ্গ অনেক ছোট হয়ে যেতে পারে।
অনেক সময় কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে লিঙ্গ বাঁকা হতে পারে। এসব কারণের মধ্যে রয়েছে আঘাত, প্রদাহ কিংবা উত্থিত লিঙ্গে চাপ প্রয়োগ। পেরোনি'জ ডিজিজের অন্য কারণের মধ্যে রয়েছে ইনজেকশনের মধ্যে পুরুষত্বহীনতার চিকিৎসা।
কিছু রোগের কারণেও পেরোনিজ ডিজিজ হয়। এসব রোগের মধ্যে রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ, ধমনি শক্ত হওয়া, ডায়াবেটিস ইত্যাদি। লিঙ্গে আঘাত পেলে তা ঠিকমতো সেরে না উঠলেও পেরোনিজ ডিজিজ হয়।
পেরোনি'জ ডিজিজের চিকিৎসায় সার্জারি
যেহেতু পেরোনিজ ডিজিজ একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হয়, তাই এর চিকিৎসা ক্ষেত্রে ভিন্নতা রয়েছে। কিছু পুরুষের ক্ষেত্রে কোনো চিকিৎসা ছাড়া এ রোগ এক বা দুই বছরের মধ্যে ভালো হয়। এমনকি স্কার টিস্যু চলে যেতে পারে। তবে দুঃখজনক ব্যাপার হলো, প্রায় ৪০ শতাংশ পুরুষের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। কিছু পুরুষের ক্ষেত্রে সার্জারি হলো উপযুক্ত চিকিৎসা, যদিও অনেক চিকিৎসক অপারেশনের আগে কমপক্ষে এক থেকে দুই বছর অপেক্ষা করার কথা বলেন। অপেক্ষার এই সময়টুকুতে ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। রোগমুক্তির চেষ্টায় অবশ্য পরে অপারেশনের প্রয়োজন হয়।
বর্তমানে দুই ধরনের সার্জারি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। একটি হলো নেসবিট পদ্ধতি। পেরোনিজ ডিজিজে এ অপারেশনটি সবচেয়ে বেশি করা হয়। তবে এ ক্ষেত্রে লিঙ্গ সচরাচর এক থেকে দুই ইঞ্চি ছোট হয়ে যায়। অন্য অরেকটি পদ্ধতিতে স্কার টিস্যুর জায়গা গ্রাফটেড টিস্যু লাগানো হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে আংশিক বা সম্পূর্ণ পুরুষত্বহীনতা ঘটতে পারে।
ঘরোয়া চিকিৎসায় ট্রাকশন ডিভাইস
পেরোনিজ ডিজিজের আধুনিক চিকিৎসা হিসেবে বর্তমানে এক ধরনের ট্রাকশন ডিভাইস পাওয়া যায়। এটি স্কার টিস্যুর কাঠিন্যকে ঠিক করে দেয় এবং লিঙ্গকে সোজা করে। ট্রাকশন ডিভাইস চিকিৎসার সুবিধা হলো, এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই এবং এটি ঘরে বসেই নেওয়া যেতে পারে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন