
ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে বদল হয় আবহাওয়াও। চৈত্র পেরিয়ে কালবৈশাখীর মত্ত হাওয়া আমরা কজনই বা মানিয়ে নিতে পারি? জীবন ধারণের ক্ষেত্রে পরিবেশ অনেক বড় ভূমিকা রাখে। বড়রা যদিও কিছুটা মানিয়ে নিতে পারে পরিবর্তনশীল ঋতু প্রক্রিয়ার সঙ্গে তবে শিশুদের ক্ষেত্রে হয় নানা সমস্যা। কারণ তাদের শারীরিক অবস্থা এতটা শক্তিশালী নয় যে আবহাওয়া পরিবর্তনে সহজেই নিজেকে মানিয়ে নেবে। তাই তো ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে শিশুর দেখা দেয় বিভিন্ন সমস্যা। কিছু কমন রোগ রয়েছে, যা ঋতু পরিবর্তনেরই ফল। শিশুরা সহজেই আক্রান্ত হয় এমন কিছু রোগ ও এর প্রতিরোধ সম্পর্কে জানাচ্ছেন আফরিন জাহান।
তাপমাত্রা, বাতাসের আর্দ্রতার হঠাত্ পরিবর্তন অনেক সময়ই শিশুদের শরীর মানিয়ে নিতে পারে না। ফলে আক্রান্ত হয় বিভিন্ন অসুখে। তা ছাড়া এই হঠাত্ পরিবর্তন বাতাসে ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাসদের বেড়ে উঠতে সহায়তা করে। তাই এ সময়ে শিশুর চট করে ঠাণ্ডা লাগে, কাশি হয়, গায়ে র্যাশ বের হওয়া ছাড়াও আরও কিছু রোগ দেখা দিতে পারে।
যেমন—
জ্বর : এ সময়ে শিশুদের ভাইরাসজনিত জ্বর হতে পারে। এ জ্বর থাকে ৫-৭ দিন। এ ক্ষেত্রে অনেক সময় বোঝা যায় না শিশুকে অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া উচিত কি না। ফলে জ্বর ১০০ ডিগ্রি হলে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাওয়াতে পারেন। এ সময়ে শিশুকে গায়ে সুতার পাতলা জামাকাপড় পরাবেন। ঘরের ফ্যান চালিয়ে রাখুন। জ্বর বেশি হলে চিকিত্সকের পরামর্শ নিন।
কাশি : অনেক সময় কাশি হলে বোঝা যায় না এটার কারণ কী। তাই অল্প কাশি হলে দু-এক দিন হালকা গরম পানি দিয়ে শিশুকে গার্গিল করান। সঙ্গে নাক-গলা বন্ধ হয়ে গেলে স্টিম নিতে বলতে পারেন। আর এতেও যদি কাজ না হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
র্যাশ : বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস শিশুর শরীরে র্যাশ তৈরি করতে পারে। মনে রাখবেন র্যাশ মানেই হাম বা চিকেন ফক্স নয়। র্যাশে ত্বক চুলকালে প্রথমে শিশুকে অ্যান্টিঅ্যালার্জিক খাওয়াতে পারেন। কাজ না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে—
* এই গরমে শিশুর গায়ে বেশি জামাকাপড় পরাবেন না, এতে গায়ে ঘাম বসে অন্য সমস্যাও হতে পারে।
* শিশুকে প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়ান।
* মৌসুমি ফল যেমন—আপেল, শসা, তরমুজ, আঙুর, বাঙ্গি এ সময়ে খাওয়ানো খুবই ভালো।
* শিশু সংক্রামক রোগে ভুগলে এই সময় তার শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যায়। সে ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে প্রচণ্ড রোদ ও ধুলোময়লা থেকে দূরে রাখতে। দোকান ও বাজারে নিয়ে যাবেন না। এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।
* আর অবশ্যই শিশুকে ৬টি রোগ প্রতিষেধক টিকা দিয়ে নিন।
সুতরাং আপনার সন্তানের সুস্থতা নির্ভর করে আপনার ওপর। তাই এ সময়ে তার প্রতি বাড়তি যত্ন নিন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন