রবিবার, ১ মে, ২০১১

সাইলেন্ট হার্ট এট্যাক – উপসর্গহীন হার্ট এট্যাক

হার্ট এট্যাক তথা এমআই (Myocardial Infraction) সাধারনত বেশ কিছু উপসর্গ সহ দেখা দেয়। যার মধ্যে প্রধানত রয়েছে বুকে ব্যথা হওয়া, বুকে চাপ লাগা, অস্থিরতা বোধ করা, হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলা। বুকের ব্যথা কখনো কখনো বাম ঘাড়ের দিকে বা বাম চোয়ালে যেতে পারে, শুধু তাইনা, বাম বাহুর ভিতরের দিকেও ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এসব উপসর্গ দেখে আমরা দ্রুত বুঝে যাই কারো এম আই হলে, এবং দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করি। আর এমন অবস্থায় বাসায় বা অন্য কোথাও কোনো মানুষকে পাওয়া গেলে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে, হাস্পাতাল দূরে হলে এস্পিরিন ৪টা ট্যাবলেট একসাথে খায়িয়ে দিতে হবে। পারলে জীহবার নিচে নাইট্রোকার্ড বা নাইট্রোসোল স্প্রে করে দিতে হবে!!

সবই ঠিক আছে, কিন্তু যদি এমন কিছু হয় যখন হার্ট এট্যাকের কিছুই রোগী বুঝতে পারবে না, কিন্তু হার্ট এট্যাক হয়ে হঠাৎ খুব খারাপ অবস্থা হয়ে যেতে পারে এমনকি জীবনাবসান ও ঘটে যেতে পারে!

এমনটা হওয়া অসম্ভব নয়!!এমন অবস্থা হওয়াকেই বলে সাইলেন্ট এমআই বা সাইলেন্ট হার্ট এট্যাক!

সাইলেন্ট কেন? – কারন রোগী এই সময় কিছু বুঝতে পারেনা, আর পারলেও খুব অল্প বা সাধারন ব্যথা হিসেবে মনে করে তেমন পাত্তা দেয় না!

সবার হতে পারে??

না! সাধারনত ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রেই প্রধানত এমনটা দেখা যায়।

তবে কি যেকোনো ডায়াবেটিস রোগীর এমনটা হতে পারে?

না, সেটাও নয়। সাধরনত যাদের শরীরে ডায়াবেটিস এর জন্য নানা ধরনের কমপ্লিকেশান তৈরি হয়, তাদের ক্ষেত্রেই এমনটা হয়ে থাকে!

কেন হয়?

ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথী হওয়ার কারনে শরীরের বোধ শক্তি অনেকটাই কমে আসে ফলে হার্ট এট্যাকের সময় তীব্র ব্যথা হলেও মানুষ সেটা বুঝতে পারে না সহজে।

চিকিৎসা - চিকিৎসার ব্যপারে সাধারন হার্ট এট্যাক আর সাইলেন্ট হার্ট এট্যাক এর মাঝে কোনো পার্থক্য নেই।

সচেতন থাকাটা খুবই প্রয়োজন – সাইলেন্ট এম আই থেকে দূরে থাকতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখাটা খুব প্রয়োজনীয়।

কি করা উচিতঃ

* ডায়াবেটিস এর কম্পলিকেশান যার শরীরে তৈরি হবে তাকে সব সময় সাবধানে থাকতে হবে
* নিয়মিত কোনো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বা ডায়াবেটোলোজিস্ট এর তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে
* বুকে অল্প ব্যথা দেখা দিলে কিংবা অস্থিরতা বোধ করতে (যেটা হাইপোগ্লাইসেমিয়া নয়)দ্রুত হাসাপাতালে যেতে হবে!
অস্থিরতা হাইপোগ্লাইসেমিয়ার জন্য নাকি সাইলেন্ট এম আই এর জন্য কিভাবে বুঝবে?

হাইপোগ্লাইসেমিয়া এর জন্য যখন অস্থিরতা হয়, তখন গ্লুকোজ বা চিনি কিংবা অন্য কোনো খাবার খেলে সেটা দ্রুতই ঠিক হয়ে আসবে কিন্তু সাইলেন্ট এম আই এর ক্ষেত্রে সেটা হবে না। আর ঘরে গ্লুকোমিটার থাকলে সহজেই এটা বোঝা যাবে!!


সাইলেন্ট এম আই এর ব্যপারে নিজে সচেতন হোন এবং অন্যকে সচেতন করুন!!


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন