ত্বক নরম-কোমল ও মসৃণ রাখার প্রথম এবং প্রধান শর্তই হচ্ছে ত্বককে পরিচ্ছন্ন রাখা। আমাদের ত্বকের জমে থাকা ধুলো-ময়লা, পুরনো মেকআপ বা কসমেটিকস, অতিরিক্ত তেল, ঘাম ইত্যাদি যথাযথভাবে পরিষ্কার করাকেই বলা হয় ক্লিনজিং। আর এ ক্লিনজিং হয় দুই রকমের সাধারণ ক্লিনজিং ও ডিপ ক্লিনজিং। ঘরে বসে ত্বকের ক্লিনজিং করবেন কীভাবে?
প্রথমে বরং আমরা জেনে নেই ক্লিনজিং কেন করব?
এর কারণ হচ্ছে, সঠিকভাবে ত্বক পরিষ্কার করলে ত্বক শুধু মসৃণ ও উজ্জ্বলই হয় না, ত্বকের নানারকম সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। কারণ ত্বকে ময়লা জমে থাকলে ব্রণসহ নানারকম সমস্যা হয়। ত্বকের ক্লিনজিং করা হয় সাধারণত দু’রকম। একটা হচ্ছে সাধারণ ক্লিনজিং, আর একটা ডিপ ক্লিনজিং। সাধারণ ক্লিনজিং হচ্ছে বাইরে থেকে ফিরে ক্লিনজিং লোশন দিয়ে ত্বক ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলা। কিন্তু ডিপ ক্লিনজিংটা অবশ্যই বিশেষ পদ্ধতিতে একটু সময় নিয়ে করতে হবে।
ত্বক বুঝে ক্লিনজিং
ক্লিনজিং করার আগে অবশ্যই ত্বকের ধরন বুঝে নিতে হবে। তারপর ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্লিনজার বেছে নিন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ডিপ ক্লিনজিংটা বেশি জরুরি। কারণ তৈলাক্ত ত্বকে ধুলো-ময়লা জমে বেশি। এর ফলে লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়। তখন ত্বকে ব্রণ, ব্ল্যাক ও হোয়াইট হেডস সমস্যা দেখা দেয়। এ ধরনের ত্বকের জন্য অ্যাস্ট্রিনজেন্ট সমৃদ্ধ ক্লিনজার উপযোগী। এতে ত্বক পরিষ্কারও হয়, ত্বকের আর্দ্রতাও বজায় থাকে। আর শুষ্ক ও স্বাভাবিক ত্বকের জন্য উপযোগী হচ্ছে ক্লিনজিং মিল্ক বা লোশন।
যেভাবে করতে হবে
প্রথমে মুখটা টিস্যু দিয়ে মুছে নিন। এরপর তৈলাক্ত ত্বক হলে তুলোর সাহায্যে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট লোশন বা ওয়াটার বেসড লোশন সারা মুখে লাগান। আর শুষ্ক ও স্বাভাবিক ত্বক হলে ক্লিনজিং লোশন মুখে লাগিয়ে আলতোভাবে ম্যাসাজ করুন। এর পর মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে ধুয়ে নিন। এতে বাড়তি লোশন ধুয়ে যাবে। এরপর গরম পানির ভাপ লাগিয়ে মুখ স্ট্রিম করুন মিনিট পাঁচেক। গরম পানিতে রুমাল ভিজিয়ে পানি নিংড়ে মুখে চেপে ধরেও স্ট্রিম নিতে পারেন। এরপর ব্ল্যাক হেডস, হোয়াইট হেডস চেপে বের করুন। তারপর স্ক্রাব লাগিয়ে হালকা ম্যাসাজ করুন। এরপর ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিয়ে মুখ ধুয়ে তোয়ালে দিয়ে হালকাভাবে চেপে মুছে ময়েশ্চারাইজার লাগান। শুষ্ক ত্বকে স্ক্রাবার না লাগানোই ভালো। আর ক্লিনজিংয়ের পর ত্বকে আইস থেরাপি বা বরফ ঘষা ভালো। কারণ লোমকূপ বড় হয়ে গেলে স্ট্রিম নেয়ার পর লোমকূপ খুলে যায়। ওটা বন্ধ করার জন্য বরফ ঘষতে হয়। বাজারে কেনা ময়েশ্চারাইজার লাগাতে না চাইলে হাতে সামান্য মধু নিয়ে পানি মিশিয়ে মুখে লাগান। অলিভঅয়েলের সঙ্গে পানি মিশিয়েও লাগাতে পারেন।
আরও কিছু টিপস
x কচি শসা ব্লেন্ড করে মুখে লাগিয়ে রেখে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক ভালো পরিষ্কার হবে।
× তরমুজের লাল অংশ খাওয়ার পর সাদা শাসটা ত্বক খুব ভালো পরিষ্কার করে।
× পাকা টমেটো ও করলার রসও ত্বক পরিচ্ছন্নতায় উপকারী।
× বেবি অয়েল ও ভেজিটেবল অয়েলও ত্বক পরিষ্কার করে।
× কাঁচা দুধ তুলোর সাহায্যে ত্বকে সার্কুলার মুভমেন্টে ঘষুন। ১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
× লেবুর খোসা শুকিয়ে গুঁড়া করে রেখে দিন। পানিতে গুলিয়ে এটা স্ক্রাবার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
× আপেলের পাতলা স্লাইস ত্বকের ওপর বিছিয়ে রাখুন। অতিরিক্ত তেল শুষে নেবে।
× আপেলের রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগান। এরপর টক দইয়ের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে হালকা ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন