শুক্রবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১০

খুশকিমুক্ত চুল


শীতের এই শুষ্ক হাওয়ায় খুশকির যন্ত্রণায় অস্থির সবাই। মাথা থেকে মরা চামড়া ওঠাকে খুশকি বলে। এ ক্ষেত্রে মাথার চামড়া থেকে ছোট ছোট মরা চামড়া উঠতে থাকে। ফলে মাথার চামড়া চুলকায় এবং চিরুনির সঙ্গে খুশকিগুলো বেরিয়ে আসতে থাকে। খুশকি যদি খুব বেশি হয় তবে তাকে সেবোরিক ডার্মাটাইটিসের বহিঃপ্রকাশ বলে ধরে নিতে হবে। কিন্তু খুশকির সঙ্গে সেবোরিক ডার্মাটাইটিসের পার্থক্য হলো এই যে, খুশকিতে মাথা থেকে আইশযুক্ত মরা চমড়া উঠবে, তবে মাথায় কোনো প্রদাহ থাকবে না। আর যদি মাথায় খুশকি অর্থাৎ মরা আইশের মতো চামড়া উঠে সে সঙ্গে মাথায় প্রদাহও থাকে, তবে তখন আমরা তাকে খুশকি নয় বরং সেবোরিক ডার্মাটাইটিস বলে চিহ্নিত করব। মনে রাখতে হবে, খুশকিকে সব সময় নির্মূল করা সম্ভব হয় না। কতগুলো খুশকি নিবারক শ্যাম্পু দিয়ে দমিয়ে রাখা যায়। আর তাই দমিয়ে রাখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে যে, একে দমিয়ে না রাখলে এর থেকে মাথার চুল ঝরে যেতে থাকবে। অনেকে আবার মনে করেন, খুশকি হলে মাথায় বেশি করে তেল দিতে হবে। ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল। কারণ এই তেল দেওয়ার কারণে মাথা সব সময় তৈলাক্ত ও ভেজা থাকে, ফলে মাথায় একশ্রেণীর ছত্রাকের আক্রমণ হতে থাকে এবং এ রোগ ক্রমেই আরো বাড়তে থাকে। আবার একশ্রেণীর রোগী এই খুশকি দমাতে মাথায় খৈল ব্যবহার করে। খৈল আর কিছুই নয়, সরিষা থেকে তেল বানাতে বর্জ্য হিসেবে এ খৈল পাওয়া যায়। এটিও একটি ভুল ধারণা। খৈল ব্যবহারে খুশকি দূর হয় এমন কোনো কথা নেই। খৈল ব্যবহারের ফলে খুশকিগুলো ভিজে মাথার ত্বকে লেগে থাকে। ফলে অনেকেরই হয়তো মনে হতে পারে যে, খুশকি দূর হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল। যাদের মাথায় খুশকি হয় তারা মাথা ভেজা রাখবেন না, বরং মাথা যেন সব সময় পরিষ্কার থাকে তার ব্যবস্থা করতে হবে এবং ভেজা অবস্থায় মাথার চুল বাঁধাও উচিত নয়। তাতে চুলের নিচে পানি আটকা পড়ে ত্বক ভেজা থাকে, যা কি-না এই রোগ বাড়াতে সাহায্য করে। আর একটি কথা, যাদের খুশকি আছে তাদের ব্যবহার করা চিরুনি অন্য কারও ব্যবহার করা উচিত নয়। এর মাধ্যমে খুশকিজনিত ছত্রাক একজনের মাথা থেকে অন্যজনের মাথায় চলে যেতে পারে। অনেক সময় সেবোরিক ডার্মাটাইসকে আমরা সাধারণত খুশকি বলে মনে করি। তাই মনে রাখতে হবে দেহের তেল গ্রন্থিযুক্ত স্থান যেমন মাথার ত্বক, বুকের মধ্যখানে, কানের পেছনের দিক, বগল ইত্যাদি লোমযুক্ত স্থানে যদি খোসাযুক্ত লালচে দাগ দেখা যায় সেক্ষেত্রে আমরা সেবোরিক ডার্মাটাইটিস বলে ধরে নেব।
চিকিৎসা : খুশকি আর সেবোরিক ডার্মাটাইটিসের চিকিৎসা প্রায় একই রকম। খুশকি নিবারক শ্যাম্পু যেমন জিঙ্ক পাইরিথিওন, সেলেনিয়াম সালফাইড অথবা কেটোকোনাজল শ্যাম্পু ব্যবহারে খুশকি দমন করা সম্ভব।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন