শুক্রবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক প্রতিরোধ

বিশ্বের এক নম্বর মরণব্যাধি হƒদরোগ। কোন রকম পূর্বাভাস ছাড়াই যে কোন সময় এটি কেড়ে নিতে পারে আমাদের জীবন। বিশ্বের মোট মৃত্যুর অর্ধেকই হয় হার্টের রোগ ও স্ট্রোকে। হƒদরোগে আক্রান্তদের ২৫ ভাগের মৃত্যু হয় হাসপাতালে পৌঁছার আগেই। হার্ট অ্যাটাক হয়েও অনেক সময় বেঁচে থাকতে হয় নানা অক্ষমতা এবং হঠাৎ মৃত্যুর ভয় নিয়ে।
কার্ডিও ভাস্কুলার রিস্ক এনালাইজার একটি যন্ত্র যার মাধ্যমে আপনি ৫-৮ বছর আগেই জানতে পারবেন হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের আগাম সতর্ক সংকেত, সে অনুযায়ী প্রতিরোধ করুন হার্ট অ্যাটাক বা ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি।
বাংলাদেশে ৩০ বছর বয়সের পর হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হচ্ছে এমন লোকের সংখ্যা কম নয়; ৪০-৫০ ঊর্ধ্ব ব্যক্তিদের হƒদরোগ তো অজানা নয়।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইন্সটিটিউট সম্প্রতি জানিয়েছে, বাংলাদেশে প্রতি ১০ জনে ১ জনের হার্টের সমস্যা আছে। এদের সমস্যা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও জটিল হয়। তারা আরও জানান, বাংলাদেশে প্রতিবছর নতুন করে ১৫-২০ শতাংশ জনগোষ্ঠী উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হচ্ছে। এদেশে স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাব যতই থাকুক না কেন রোগভীতি ও এ থেকে মৃত্যু ভয় কিন্তু কম নয়।
বাংলাদেশে হƒদরোগ বাড়ার কারণ
বর্তমানে আমাদের জীবনধারা পশ্চিমা ধাঁচে পরিবর্তন হচ্ছে। ফাস্টফুডের সঙ্গে দ্রুততালে বাড়ছে ফ্যাট খাওয়ার প্রবণতা। কমেছে শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস এবং টাটকা খাবার খাওয়ার ঝোঁক।
জীবনের গতি বাড়তে বাড়তে জেটগতির জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে একশ্রেণীর মানুষ। ফলে ইঁদুর-দৌড়ের জীবনে বাড়ছে টেনশন, মানসিক চাপÑ মন হয়ে পড়ছে ক্ষত-বিক্ষতÑ এভাবে বেড়ে চলছে হƒদরোগ। অবিশ্বাস্যভাবে বাড়ছে ধূমপান। এর বিপক্ষে সচেতনতা সৃষ্টি ও মোটিভেশনও যেন রুখতে পারছে না এর অগ্রযাত্রাকে। ধূমপান এখন আর শুধু বড়দের সঙ্গী নয়, ছোটদেরও বন্ধু। অতীতে বাঙালি ছিল কর্মমুখর, পরিশ্রম নির্ভরতায় চলছিল জীবন। জীবনযাপনের এ পদ্ধতি থেকে সরে এসেছে মানুষ। গ্রামের একশ্রেণীর মানুষ এখন মোটরসাইকেলে চড়েন বেশি, সাইকেলে চড়েন কম, হাঁটেন আরও কম। শহরাঞ্চলে লাফ দিয়ে বাড়ছে গাড়ি চড়া, বসে বসে কাজ করা ও আয়েশী জীবনযাপনের মানসিকতা। কমছে শরীরের ব্যায়াম, বাড়ছে স্থূলতা। ব্যায়াম মানে তো হার্টরেট উঠবে ১৪০-এ আর ঘাম ঝরবে টপটপ করে।
কীভাবে প্রতিরোধ করা যায় হার্ট অ্যাটাক বা ব্রেন স্ট্রোক
শুধু নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন আর কিছু নিয়ম অনুসরণ করলেই কঠিনতর হƒদরোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। কোনও ওষুধ গ্রহণ ছাড়াই কেবল খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচারণে পরিবর্তন, যোগ ব্যায়াম, প্রাণায়াম, মেডিটেনশন, নিউরোবিক্স জিমের মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাক বা ব্রেন স্ট্রোক সম্পূর্ণভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন