আমাদের প্রত্যেকেরই ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে রয়েছে নানা সমস্যা। প্রত্যেকেই চাই এই সমস্যাগুলোর শান্তিময় সমাধান। চাই রোগহীন চিন্তামুক্ত জীবন। না পাওয়ার বেদনা আমাদেরকে করে তুলে অস্থির।
ফলে আমরা ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলি নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসটুকু। অপরের ভাল ও কল্যাণের কথা চিন্তা করার মানসিক সক্ষমতা আমাদের মাঝে লোপ পাচ্ছে প্রবলভাবে। ক্রমেই ম্লান হয়ে যাচ্ছে মানবতার বোধটুকু। তাই মনকে নিয়ন্ত্রণ করে নিজের দৃষ্টিভঙ্গীটাকে বদলানো এখন সময়ের দাবী।
শরীর কি মন কে নিয়ন্ত্রণ করে, নাকি মন শরীরকে। মন আগে, নাকি শরীর। এরকম নানা প্রশ্ন কখনও কখনও ভর করে আমাদের মনে। আজ থেকে প্রায় পঁচিশ/ত্রিশ বছর আগেও এদেশের অধিকাংশ মানুষ জানতো না মনের শক্তির কথা। জানতো না মনকে নিয়ন্ত্রণে রেখে শরীরকে ঠিক রাখার কায়দা কানুন। মনকে নিয়ন্ত্রণ করার বা মেডিটেশন পদ্ধতি শিখার কোন ব্যবস্থাও ছিলনা তখন।
প্রাচীনকাল থেকেই মন নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন পদ্ধতির প্রচলন ছিল। ভারত মহাদেশে ছিল এর আদি চর্চা। পরবর্তীতে আমেরিকার টেক্সাস লরেডো শহরে মন নিয়ন্ত্রণের আধুনিক ও ডাইনামিক পদ্ধতির প্রবর্তন করেন হোঁজে সিলভা নামক স্পেনিশ বংশভুত এক ব্যক্তি। তিনি দীর্ঘ ২২ বছর মন নিয়ে গবেষণা করে ১৯৬৬ সাল থেকে প্রথম মন নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক বেসিক লেকচার সিরিজ কোর্সের প্রশিক্ষণ প্রদান শুরু করেন।
হোঁজে সিলভা তার আবিস্কৃত পদ্ধতিতে মানুষের ব্রেইন ফ্রিকোয়েনন্সি নিয়ন্ত্রণে রেখে শরীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ্য থাকার কথা বলেছেন। ব্রেইন ফ্রিকোয়েনন্সি প্রতি সেকেন্ডে ১৪ বা তদূর্ধ্ববার স্পন্দিত লেভেলকে ‘বিটা’ লেভেল বলা হয়। এই লেভেলে ব্রেইন ফ্রিকোয়েনন্সি যত বাড়তে থাকে মানুষের শরীরে তত ইনব্যালেন্সি তৈরী হতে থাকে। মানুষ তখন হয়ে ওঠে অস্থির ও উত্তেজিত। এভাবেই এক সময় সে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না। তাই বিটা লেভেলে মানুষ ঘটায় নানা অঘটন। টেনশনের সময়ও মানুষের ব্রেইন ফ্রিকোয়েনন্সি একইভাবে বেড়ে যায়। এতে ঘটে স্ট্রোক ও হার্ট এ্যাটাকের মতো ঘটনা। তাই শারীরিক ও মানসিক সুস্থ্যতার জন্য মানুষের ব্রেইন ফ্রিকোয়েনন্সি নিয়ন্ত্রণে রাখা একান্ত প্রয়োজন।
মনকে নিয়ন্ত্রণে রেখে লক্ষ্যে পৌছানোর পদ্ধতি বাঙালিদের মাঝে প্রথম নিয়ে আসেন প্রয়াত মাহী কাজী।১৯৫৬ সালে তিনি তৎকালীন আহসান উল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বর্তমান বুয়েট) থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। ১৯৬৪ সালে আইবিএম কোম্পানী কর্তৃক উপমহাদেশের দুইজন কম্পিটার প্রশিক্ষকের মধ্যে তিনি অন্যতম। তার তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে আণবিক শক্তি গবেষনা কেন্দ্রে সর্বপ্রথম কম্পিউটার স্থাপিত হয়।
পেশাগত কারণে মাহী কাজী যুক্তরাজ্যে গেলে সেখানেই পরিচিত হন সিলভা মেথডের সংগে। সরাসরি হোঁজে সিলভা থেকে উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ক্যামব্রিজ শহরে সিলভা মেথড এর প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বেশ কিছুদিন।
১৯৯০ সালের শেষের দিকে মাহী কাজী দেশে ফিরে আসেন এবং বাংলাদেশে সর্বপ্রথম মন নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সিলভা মেথড শেখাতে শুরু করেন।
সে থেকেই শুরু। উন্নত বিশ্বের মতো এ দেশের মানুষের মধ্যেও আজ সচেতনতা বেড়েছে, বেড়েছে রোগ নিরাময়ের প্রয়োজনে যত্রতত্র ঔষধ গ্রহণ না কারার প্রবণতা। ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রয়া থেকে বাঁচতে মানুষ নির্ভর করছে নানা ধরণের বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির ওপর। পৃথিবীর প্রায় ১২০টি দেশের মতো এ দেশেও চলছে মনকে নিয়ন্ত্রণ করে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ্য থাকার বিভিন্ন পদ্ধতির চর্চা। মন নিয়ন্ত্রণ বা মেডিটেশন চর্চা করছেন হাজার হাজার মানুষ।
বর্তমানে বাংলাদেশে মননিয়ন্ত্রণের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। তৎমধ্যে সিলভা আলট্রামাইন্ড কোর্সটির আয়োজন করে এম কিউ (মাহী কাজী) মিশন। সম্প্রতি চালু হওয়া ক্রিয়েটিভ মেডিটেশন এর প্রবর্তক ড.হাসান ও আইসোমেট্রিক সহ এদেশে যতগুলো মন নিয়ন্ত্রণের মেথড চালু রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বহুল প্রচলিত শহীদ আল বোখারী মহাজাতক কর্তৃক উদ্ভাবিক কোয়ান্টাম মেথড। কোয়ান্টাম মেথড শুধু মেডিটেশন শেখায় না শেখায় জীবন যাপনের পরিপূর্ণ পদ্ধতি।
প্রাচ্যের সাধনা আর আধুনিক বিজ্ঞানের নির্যাসে সঞ্জীবিত কোয়ান্টাম মেথড মেডিটেশন প্রক্রিয়া। সাধকদের সাধনা ও মনোবিজ্ঞানের প্রক্রিয়ার স্বমন্বয়ের ফলে সহজে মেডিটেটিভ লেভেলে পৌছে আত্মনিমগ্ন হওয়া যায়। গভীর আত্মনিমগ্নতা আত্মশক্তির জাগরণ ঘটায় ভেতর থেকেই। আর অন্তরের জাগরণ বদলে দেয় জীবনের বাকি সবকিছু।
মেডিটেশন হলো সচেতনভাবে দেহ মন এবং মস্তিষ্কের শিথিলায়নের একটি আধুনিক বৈজ্ঞানিক এবং সহজ প্রক্রিয়া। মেডিটেশনের মাধ্যমে আমরা আমাদের শরীরকে শিথিল এবং মন ও মস্তিককে প্রশান্ত করতে পারি। ফলে টেনশন অস্থিরতা মুক্ত হয়ে আমরা সচেতনভাবে দেহ-মনে সুখানুভূতি তৈরি এবং সবসময় তা উপভোগ করতে পারি। ফলে দৈনন্দিন জীবনে প্রতিটি কাজ আমরা করতে পারি আনন্দ নিয়ে এবং পেতে পারি সহজ সাফল্য। অর্থাৎ শারীরিক মানসিক বৈষয়িক প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রশান্তিতে থাকার জন্যে, সফল হওয়ার জন্যে আমাদের শরীর মন মস্তিষ্কের যে অনুকূল অবস্থা হওয়া প্রয়োজন মেডিটেশন হচ্ছে দেহমনে সে অবস্থা সৃষ্টির একটি সহজ বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া।
টেনশনের অভিশাপ থেকে দৈনন্দিন জীবনে আপনি মুক্ত থাকবেন মেডিটেশনের মাধ্যমে প্রশান্ত থেকে। টেনশনের কারণে সৃষ্ট শতকরা ৭৫ ভাগ মনোদৈহিক রোগ যেমন মাইগ্রেন, সাইনুসাইটিস, ঘাড়ে-পিঠে-কোমরে বা শরীরের যেকোনো স্থানে দীর্ঘদিনের ব্যথা, হজমের সমস্যা, আইবিএস, এসিডিটি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, অনিদ্রা প্রভৃতি রোগগুলো থেকে আপনি পুরোপুরি নিরাময় লাভ করতে পারেন কোনো ওষুধ ব্যবহার ছাড়াই। আর অন্যান্য রোগ নিরাময়েও ওষুধ ও সার্জারির পাশাপাশি সুস্থ জীবন-দৃষ্টি এবং মেডিটেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
একজন শিক্ষার্থী মেডিটেশন করার মাধ্যমে শিখে অখণ্ড মনোযোগ ও অল্পসময়ে পড়া আয়ত্ত করার টেকনিক। একজন গৃহিণী মেডিটেশন করে পান বিভিন্ন ধরনের দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা নিরাময়ের সন্ধানসহ স্বামী সংসার সন্তান নিয়ে একটি সুখী পারিবারিক জীবন যাপনের আনন্দ। একজন পেশাজীবী সবসময় মাথা ঠান্ডা রেখে নিতে পারেন সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত। আর একজন সফল মানুষ হওয়ার জন্যে মেডিটেশনে মনছবি চর্চা করে যে কেউ তার জীবনের যেকোনো চাওয়াকে পরিণত করতে পারেন স্বতঃস্ফূর্ত পাওয়ায়।
আর ইবাদত উপাসনায় একাগ্রতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আত্মিক আধ্যাত্মিকভাবে অগ্রসর হতে পারেন ধ্যানের পথ ধরে। এভাবে একটি প্রশান্ত মন, সুস্থ জীবন ও কর্মব্যস্ত সুখী জীবন যাপনের জন্যেই সকলের প্রয়োজন মেডিটেশন করা।
আমাদের প্রত্যেকের দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা আছে কিন্তু ভাল থাকতে চাই সকলেই। বর্তমান প্রেক্ষাপটে কোয়ান্টাম মেথড জীবনের কন্টকাকীর্ণ বাঁকগুলোকে পরিনত করে চলেছে পুষ্পিত সৌন্দর্যের রাজপথে। উন্মোচিত করেছে প্রশান্তি, সুস্বাস্থ্য, সাফল্য আর সবাই মিলে ভাল থাকার সীমাহীন সম্ভাবনার দ্বার। বিশ্বাস করলে প্রয়োজনে যে কেউ এই সম্ভাবনার দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারে প্রশান্তির স্বপ্নিল ভূবনে। সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।
৮০০০/- টাকা দিয়ে ৪ দিনের কোয়ান্টাম মেথড কোর্স না করেও মেডিটেশন শেখা এবং চর্চা করা যায়। সারা দেশে অর্ধশতাধিক সেন্টারে নির্দিষ্ট দিনে ফ্রি মেডিটেশন সম্পর্কে জানা ও চর্চা করার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও আপনি ইচ্ছে করলে নিচের লিঙ্ক থেকে মেডিটেশনের অডিও ও অন্যান্য প্রকাশনা সহ অনেক কিছু ডাউনলোড করতে পারবেন একদম বিনা মুল্যে।
http://quantummethod.org.bd/bn/publications
ফলে আমরা ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলি নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসটুকু। অপরের ভাল ও কল্যাণের কথা চিন্তা করার মানসিক সক্ষমতা আমাদের মাঝে লোপ পাচ্ছে প্রবলভাবে। ক্রমেই ম্লান হয়ে যাচ্ছে মানবতার বোধটুকু। তাই মনকে নিয়ন্ত্রণ করে নিজের দৃষ্টিভঙ্গীটাকে বদলানো এখন সময়ের দাবী।
শরীর কি মন কে নিয়ন্ত্রণ করে, নাকি মন শরীরকে। মন আগে, নাকি শরীর। এরকম নানা প্রশ্ন কখনও কখনও ভর করে আমাদের মনে। আজ থেকে প্রায় পঁচিশ/ত্রিশ বছর আগেও এদেশের অধিকাংশ মানুষ জানতো না মনের শক্তির কথা। জানতো না মনকে নিয়ন্ত্রণে রেখে শরীরকে ঠিক রাখার কায়দা কানুন। মনকে নিয়ন্ত্রণ করার বা মেডিটেশন পদ্ধতি শিখার কোন ব্যবস্থাও ছিলনা তখন।
প্রাচীনকাল থেকেই মন নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন পদ্ধতির প্রচলন ছিল। ভারত মহাদেশে ছিল এর আদি চর্চা। পরবর্তীতে আমেরিকার টেক্সাস লরেডো শহরে মন নিয়ন্ত্রণের আধুনিক ও ডাইনামিক পদ্ধতির প্রবর্তন করেন হোঁজে সিলভা নামক স্পেনিশ বংশভুত এক ব্যক্তি। তিনি দীর্ঘ ২২ বছর মন নিয়ে গবেষণা করে ১৯৬৬ সাল থেকে প্রথম মন নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক বেসিক লেকচার সিরিজ কোর্সের প্রশিক্ষণ প্রদান শুরু করেন।
হোঁজে সিলভা তার আবিস্কৃত পদ্ধতিতে মানুষের ব্রেইন ফ্রিকোয়েনন্সি নিয়ন্ত্রণে রেখে শরীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ্য থাকার কথা বলেছেন। ব্রেইন ফ্রিকোয়েনন্সি প্রতি সেকেন্ডে ১৪ বা তদূর্ধ্ববার স্পন্দিত লেভেলকে ‘বিটা’ লেভেল বলা হয়। এই লেভেলে ব্রেইন ফ্রিকোয়েনন্সি যত বাড়তে থাকে মানুষের শরীরে তত ইনব্যালেন্সি তৈরী হতে থাকে। মানুষ তখন হয়ে ওঠে অস্থির ও উত্তেজিত। এভাবেই এক সময় সে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না। তাই বিটা লেভেলে মানুষ ঘটায় নানা অঘটন। টেনশনের সময়ও মানুষের ব্রেইন ফ্রিকোয়েনন্সি একইভাবে বেড়ে যায়। এতে ঘটে স্ট্রোক ও হার্ট এ্যাটাকের মতো ঘটনা। তাই শারীরিক ও মানসিক সুস্থ্যতার জন্য মানুষের ব্রেইন ফ্রিকোয়েনন্সি নিয়ন্ত্রণে রাখা একান্ত প্রয়োজন।
মনকে নিয়ন্ত্রণে রেখে লক্ষ্যে পৌছানোর পদ্ধতি বাঙালিদের মাঝে প্রথম নিয়ে আসেন প্রয়াত মাহী কাজী।১৯৫৬ সালে তিনি তৎকালীন আহসান উল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বর্তমান বুয়েট) থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। ১৯৬৪ সালে আইবিএম কোম্পানী কর্তৃক উপমহাদেশের দুইজন কম্পিটার প্রশিক্ষকের মধ্যে তিনি অন্যতম। তার তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে আণবিক শক্তি গবেষনা কেন্দ্রে সর্বপ্রথম কম্পিউটার স্থাপিত হয়।
পেশাগত কারণে মাহী কাজী যুক্তরাজ্যে গেলে সেখানেই পরিচিত হন সিলভা মেথডের সংগে। সরাসরি হোঁজে সিলভা থেকে উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ক্যামব্রিজ শহরে সিলভা মেথড এর প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বেশ কিছুদিন।
১৯৯০ সালের শেষের দিকে মাহী কাজী দেশে ফিরে আসেন এবং বাংলাদেশে সর্বপ্রথম মন নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সিলভা মেথড শেখাতে শুরু করেন।
সে থেকেই শুরু। উন্নত বিশ্বের মতো এ দেশের মানুষের মধ্যেও আজ সচেতনতা বেড়েছে, বেড়েছে রোগ নিরাময়ের প্রয়োজনে যত্রতত্র ঔষধ গ্রহণ না কারার প্রবণতা। ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রয়া থেকে বাঁচতে মানুষ নির্ভর করছে নানা ধরণের বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির ওপর। পৃথিবীর প্রায় ১২০টি দেশের মতো এ দেশেও চলছে মনকে নিয়ন্ত্রণ করে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ্য থাকার বিভিন্ন পদ্ধতির চর্চা। মন নিয়ন্ত্রণ বা মেডিটেশন চর্চা করছেন হাজার হাজার মানুষ।
বর্তমানে বাংলাদেশে মননিয়ন্ত্রণের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। তৎমধ্যে সিলভা আলট্রামাইন্ড কোর্সটির আয়োজন করে এম কিউ (মাহী কাজী) মিশন। সম্প্রতি চালু হওয়া ক্রিয়েটিভ মেডিটেশন এর প্রবর্তক ড.হাসান ও আইসোমেট্রিক সহ এদেশে যতগুলো মন নিয়ন্ত্রণের মেথড চালু রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বহুল প্রচলিত শহীদ আল বোখারী মহাজাতক কর্তৃক উদ্ভাবিক কোয়ান্টাম মেথড। কোয়ান্টাম মেথড শুধু মেডিটেশন শেখায় না শেখায় জীবন যাপনের পরিপূর্ণ পদ্ধতি।
প্রাচ্যের সাধনা আর আধুনিক বিজ্ঞানের নির্যাসে সঞ্জীবিত কোয়ান্টাম মেথড মেডিটেশন প্রক্রিয়া। সাধকদের সাধনা ও মনোবিজ্ঞানের প্রক্রিয়ার স্বমন্বয়ের ফলে সহজে মেডিটেটিভ লেভেলে পৌছে আত্মনিমগ্ন হওয়া যায়। গভীর আত্মনিমগ্নতা আত্মশক্তির জাগরণ ঘটায় ভেতর থেকেই। আর অন্তরের জাগরণ বদলে দেয় জীবনের বাকি সবকিছু।
মেডিটেশন হলো সচেতনভাবে দেহ মন এবং মস্তিষ্কের শিথিলায়নের একটি আধুনিক বৈজ্ঞানিক এবং সহজ প্রক্রিয়া। মেডিটেশনের মাধ্যমে আমরা আমাদের শরীরকে শিথিল এবং মন ও মস্তিককে প্রশান্ত করতে পারি। ফলে টেনশন অস্থিরতা মুক্ত হয়ে আমরা সচেতনভাবে দেহ-মনে সুখানুভূতি তৈরি এবং সবসময় তা উপভোগ করতে পারি। ফলে দৈনন্দিন জীবনে প্রতিটি কাজ আমরা করতে পারি আনন্দ নিয়ে এবং পেতে পারি সহজ সাফল্য। অর্থাৎ শারীরিক মানসিক বৈষয়িক প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রশান্তিতে থাকার জন্যে, সফল হওয়ার জন্যে আমাদের শরীর মন মস্তিষ্কের যে অনুকূল অবস্থা হওয়া প্রয়োজন মেডিটেশন হচ্ছে দেহমনে সে অবস্থা সৃষ্টির একটি সহজ বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া।
টেনশনের অভিশাপ থেকে দৈনন্দিন জীবনে আপনি মুক্ত থাকবেন মেডিটেশনের মাধ্যমে প্রশান্ত থেকে। টেনশনের কারণে সৃষ্ট শতকরা ৭৫ ভাগ মনোদৈহিক রোগ যেমন মাইগ্রেন, সাইনুসাইটিস, ঘাড়ে-পিঠে-কোমরে বা শরীরের যেকোনো স্থানে দীর্ঘদিনের ব্যথা, হজমের সমস্যা, আইবিএস, এসিডিটি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, অনিদ্রা প্রভৃতি রোগগুলো থেকে আপনি পুরোপুরি নিরাময় লাভ করতে পারেন কোনো ওষুধ ব্যবহার ছাড়াই। আর অন্যান্য রোগ নিরাময়েও ওষুধ ও সার্জারির পাশাপাশি সুস্থ জীবন-দৃষ্টি এবং মেডিটেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
একজন শিক্ষার্থী মেডিটেশন করার মাধ্যমে শিখে অখণ্ড মনোযোগ ও অল্পসময়ে পড়া আয়ত্ত করার টেকনিক। একজন গৃহিণী মেডিটেশন করে পান বিভিন্ন ধরনের দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা নিরাময়ের সন্ধানসহ স্বামী সংসার সন্তান নিয়ে একটি সুখী পারিবারিক জীবন যাপনের আনন্দ। একজন পেশাজীবী সবসময় মাথা ঠান্ডা রেখে নিতে পারেন সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত। আর একজন সফল মানুষ হওয়ার জন্যে মেডিটেশনে মনছবি চর্চা করে যে কেউ তার জীবনের যেকোনো চাওয়াকে পরিণত করতে পারেন স্বতঃস্ফূর্ত পাওয়ায়।
আর ইবাদত উপাসনায় একাগ্রতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আত্মিক আধ্যাত্মিকভাবে অগ্রসর হতে পারেন ধ্যানের পথ ধরে। এভাবে একটি প্রশান্ত মন, সুস্থ জীবন ও কর্মব্যস্ত সুখী জীবন যাপনের জন্যেই সকলের প্রয়োজন মেডিটেশন করা।
আমাদের প্রত্যেকের দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা আছে কিন্তু ভাল থাকতে চাই সকলেই। বর্তমান প্রেক্ষাপটে কোয়ান্টাম মেথড জীবনের কন্টকাকীর্ণ বাঁকগুলোকে পরিনত করে চলেছে পুষ্পিত সৌন্দর্যের রাজপথে। উন্মোচিত করেছে প্রশান্তি, সুস্বাস্থ্য, সাফল্য আর সবাই মিলে ভাল থাকার সীমাহীন সম্ভাবনার দ্বার। বিশ্বাস করলে প্রয়োজনে যে কেউ এই সম্ভাবনার দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারে প্রশান্তির স্বপ্নিল ভূবনে। সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।
৮০০০/- টাকা দিয়ে ৪ দিনের কোয়ান্টাম মেথড কোর্স না করেও মেডিটেশন শেখা এবং চর্চা করা যায়। সারা দেশে অর্ধশতাধিক সেন্টারে নির্দিষ্ট দিনে ফ্রি মেডিটেশন সম্পর্কে জানা ও চর্চা করার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও আপনি ইচ্ছে করলে নিচের লিঙ্ক থেকে মেডিটেশনের অডিও ও অন্যান্য প্রকাশনা সহ অনেক কিছু ডাউনলোড করতে পারবেন একদম বিনা মুল্যে।
http://quantummethod.org.bd/bn/publications
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন